দাদার সময় থেকেই শাড়ির দোকান ছিল আমাদের। দাদার পরে বাবা আসলো আধুনিক একটা শাড়ির দোকান দিলেন। বেশ ভালই চলছিল ব্যবসা। আমার লেখাপড়া তখন শেষের দিকে চিন্তা করলাম একটা আধুনিক ট্রেণ্ডের সাথে যায় একটা ফ্যাশান হাউজ টাইপের কিছু একটা দিতে পারলে ক্যামন হয়? কারন এতদিন কাপড়ের ব্যবসার সাথে অনেক দর্জি এবং এই ব্যবসা রিলিটেড যারা তাদের সাথে বলা চলে একটা আত্মীয়তাই হয়ে গেছে। গতানুগতিক ক্রমে দোকানও দিলাম। আধুনিকতার ছোয়া আনার জন্য ফেসবুকে পেজ খুললাম, লাইভ ভিডিও শেয়ার করছি, সেল হচ্ছে, অর্ডারও আসছে কিন্তু সব কিছুর মাঝেও একটা সময় গিয়ে ফিল হল যে নিজেস্ব যদি একটা প্লাটফর্ম থাকে মানে একটা অ্যাপ থাকে সেখান থেকে আমার যে ফিক্সড কাস্টমারগুলো আছে তাদের মেইনটেন করা খুব সহজ হয় ।
যখনি একটা অ্যাপের নিড ফিল হল, তার কাছাকাছি সময়েই ফেসবুকে দেখলাম যে “বিজঅ্যাপ” খুব সহজেই তারা একটা অ্যাপ অফার করছে। তখন অনেকটাই ক্লিক করলো আমার ভেতরে যে আসলে জিনিসটা কি হতে পারে দেখি, তো যখন এটা দেখলাম তার ভেতরে বেশকিছু অপশন আমি পেলাম, বেশ কিছু ফিচার আমি পেলাম যেগুলো আমার ব্যবসার সাথে পুরোপুরি মিলে যাচ্ছিল এবং স্পেশালি যখন আমরা বিজ অ্যাপ টিমের কনসাল্টেন্টদের সাথে বসলাম আমাদের বিজিনেসের প্যাটার্নটা শেয়ার করলাম সেখান থেকে একচুয়ালি যে জিনিস ফাইন্ড আউট হলো, আমি গতানুগতিক যে বিজনেসটা করছি তার মধ্যে এই অ্যাপের অপশনগুলো বেস হেল্পফুল।
যেমন আমরা যখন ফেসবুক লাইভ করি তখন আমার কাস্টমারদের লাইভ থেকে স্ক্রীনশট নিতে হয় আমাকে আবার স্ক্রীনশটটি ম্যাসেজ করে পাঠাতে হয়, সেখানে তাদের নাম ঠিকানা দিতে হয়, মোবাইল নাম্বার দিতে হয়, প্রডাক্ট এভেলএবেল আছে কিনা সেটা জানার কোন উপায় থাকে না এরকম বেশকিছু ইসুজ ছিল। কিন্তু যখন আমি আমার অ্যাপে প্রোডাক্টগুলো ডিসপ্লে করা শুরু করলাম এবং আমার যে ফিক্সড কাস্টমাররা আছে তারা যখন আমার অ্যাপ থেকেই অর্ডার করার অপশনটা পেয়ে গেল। এরপর তারা যখন অর্ডারটা প্লেস করে তখন আমি তাকে অটোমেটিক একটা ইনভয়েজ সেন্ট করি, বিলটা তিনি জেনে যাচ্ছে আমি প্রডাক্টটি তখন তাকে ক্যাশ অন ডেলিভারিতে পাঠিয়ে দিচ্ছি ।
যদি আমি একটু চিন্তা করি, যেমন বাবার সময় দেখতাম যে, নতুন শাড়ি কিংবা ড্রেস এসেছে কিন্তু কাস্টমারদের জানানো কোন মাধ্যম নাই। কাস্টমাররা যখন কোন পার্পাসে বা উৎসবে দোকানে এসেছে তখন তাদের নতুন কালেকশন গুলো দেখানো হত এরপর সেখান থেকে তারা পছন্দ করতো কিনে নিয়ে যেত। কিন্তু এখন আমার কাছে এই টোটাল বিষয়টা একদিনের মধ্যে সলভ করা সম্ভব হয়ে যাচ্ছে। আমি একটা লাইভের ব্যবস্থা করছি কাস্টমার দেখছে, কিংবা আমার অ্যাপের প্রডাক্ট গ্যালারিতে গিয়ে প্রডাক্টের রিভিও দেখছে বা সরাসরি এপ থেকে প্রডাক্টটি দেখছে অর্ডার করছে, আমি ক্যাশ অন ডেলিভারিতে পাঠিয়ে দিচ্ছি এবং সাথে সাথে আমি পেমেন্ট পেয়ে যাচ্ছি। সো এখানে কাস্টমারদের অর্ডার করার ওয়েটা অনেক সহজ হয়েছে। আমার জন্য কাস্টমারকে প্রডাক্টটি পাঠিয়ে দেয়া ইনভয়েজ করা এই জিনিসটাও আমার জন্য অনেক ইজি হয়ে যাচ্ছে।
পাশাপাশি আর একটা বিষয়, কাস্টমার যখন ফেসবুকে অর্ডার দিত আমাদেরকে প্রচুর নক করতো, সো ইন্ডিভিজুয়ালি চ্যাটের মাধ্যমে কাস্টমারকে রিপ্লালাই করতে হত এবং এটা অনেক সময় হয়ে উঠতো না। কারন দেখা যেত ফেসবুকের পেজটা হয়তো আমি মেইন্টেইন করছি আমার সেলসম্যানরা এইটা সম্পর্কে এত বেশি জানতো না। আর এখন যেহেতু, স্মার্ট ফোনের যুগ আমার প্রতেকটা সেলসম্যানের কাছেই একটা করে স্মার্ট ফোন আছে সো এই অ্যাপের যে ফিচার তাদের স্মার্ট ফোন থেকেও তারা লগ ইন করতে পারছে এবং তাদের লগ ইন থেকে ইন্ডিভিজুয়ালি তারা কাস্টমারের সাথে কমিউনিকেশন করতে পারছে, কিনবা কাস্টমাররা যেটা জানতে চাচ্ছে সেটার রিপ্লাই দিতে পারছে। বা ধরেন যে ড্রেসটা নিয়ে গেছে সেটার ফিডব্যক দিতে চাচ্ছেন সেটা কাস্টমাররা সরাসরি পাঠিয়ে দিতে পারছেন এবং যে সেলসম্যান সেল করছে বা মালিক হিসাবে আমি ভিউ করতে পারছি, রিপ্লাই দিতে পারছি। সো এটা আমার জন্য একটা বেশ হেপ্লফুল।
এছাড়াও আমার যে ফিক্সড কাস্টমাররা আছে যারা আমাদের এখান থেকে নিয়মিত ড্রেস নিচ্ছে, উৎসবে নিচ্ছে তাদেরকে অনেক দিন ধরেই ভাবছিলাম কোন ভাবে কোন রিওয়ার্ড দেয়া যায় কিনা কিংবা এমন কিছু অফার করা যায় কি না। এটা একচুয়ালি হয়ে উঠছিল না, ঈদে নিচ্ছে কিংবা কোন উৎসবে নিচ্ছে হয়তো তখন কোন একটা ডিস্কাউন্ট দিয়ে দিচ্ছি। সব প্রডাক্টে তো আমি আবার ডিস্কাউন্টও দিতে পারছি না, সেভাবে দিলে এই ব্যবসায় টিকে থাকাটা মুশকিল হয়ে যাবে। তো এইসব কিছু বিবেচনা করে বিজঅ্যাপ টিম যখন আমাকে বললো যে একটা লয়াল্টি প্রোগ্রাম অফার করা যেতে পারে, টোটাল যে এমাউন্ট পার্চ্ছেজ করছে তার উপরে আমি তাকে পয়েন্ট অফার করছি। কাস্টমার সে পয়েন্টটা জমাতে পারছে এবং পরবর্তীতে এই পয়েন্টটা ইউজ করে তারা অর্ডার করতে পারছে বা টোটাল বিল এমাউন্টে ডিস্কাউন্ট নিয়ে নিতে পারছে। সো কাস্টমাররাও বেশ ইন্টারেস্ট ফিল করছে।
এখন তো স্মার্ট ফোনের যুগ সবাই তো স্মার্ট ফোন ব্যবহার করছে কাস্টামার এন্ড থেকেও এটা ম্যানেজ করা বেশ সহজ, আমার প্রডাক্ট গুলো দেখা ইজি, এমনো হয়েছে যে, আমি কোন প্রডাক্ট তুলেছি প্রডাক্টটায় কোন একটা ডিফেক্ট পাওয়া গেছে, আমার কাছে ৪/৫ পিছ আছে এটা আমি আর সেল করতে পারছি না কিন্তু ফেসবুক লাইভে আমি যখন দিয়ে দিলাম তখন আর আমাদের কাছে এই অফশনটা নাই যে আমি কাস্টমারকে জানাবো যে প্রোডাক্টটা শেষ বা সেল হয়ে গেছে । কিন্তু খুব সহজেই আমি অ্যাপের মাধ্যেমে আমার প্রডাক্টের আপডেট জানিয়ে দিয়ে পারছি যে আমার প্রডাক্ট শেষ হয়ে গেছে। আমি খুব সহজেই আমার প্রডাক্ট গুলো ম্যানেজ করতে পারছি। আমি প্রডাক্ট গ্যালারি থেকে প্রডাক্ট গুলো সরিয়ে ফেলতে পারছি। আমি ফেসবুকে লাইভে দিলাম ২ টা প্রডাক্ট কিম্বা ৩ টা প্রডাক্ট কিন্তু আমার নতুন কালেকশনে আছে প্রায় আরো ৬/৭ ধরনের প্রডাক্ট যেটা হয়তো সবার রিক্যারমেন্ট নাই সেগুলো আমি অ্যাপে দিয়ে রাখতে পারছি। কাস্টমাররা ঐগুলা দেখে নিতে পারছে। তো এইসব কিছু মিলিয়ে বিজ অ্যাপ সার্ভিসটা আমার প্রতিষ্ঠানে চালু করার পরে আমি বেশ কিছু সবিধা পেলাম। আমি আমার ব্যবসায়ে নতুন একটা ডাইমেনশন পেলাম। এর জন্য আমি খুবি খুশি।